সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই শিশুরা করোনা ছড়াতে পারে

সারাদেশ

শিশুরা করোনা আক্রান্ত হয় না বা শিশুদের থেকে করোনা ছড়ায় না- অনেকেই এমন দাবি করলেও গবেষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, শিশুরা করোনা আক্রান্ত তো হয়ই, এমনকি তারা সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই করোনা অন্যকে ছড়িয়ে দিতে পারে। এ দিকে যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলগুলো চালু করার পর এক মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার শিশু করোনা সংক্রমিত হয়েছে বলে জানিয়েছে আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড চিলড্রেন হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশন।

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সাবেক অধ্যাপক উইলিয়াম হাসেলটিন বলেছেন, শিশুরা সাধারণ সর্দি-কাশির ভাইরাসের মতোই কভিড-১৯ ভাইরাসও সহজেই ছড়িয়ে দিতে পারে। খবর সিএনএনের

 

 

সোমবার এক সাক্ষাৎকারে উইলিয়াম হাসেলটিন বলেন, সবাইকেই করোনাবাহী হিসেবে সন্দেহ করা যেতে পারে। কারণ যে ভাইরাস আপনাকে মেরে ফেলতে পারে, সেটি সংক্রমণের ক্ষেত্রে সাধারণ ঠান্ডা বা সর্দি-কাশির ভাইরাসের মতোই আচরণ করে বা ছড়ায়।

তিনি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, কারা এই ভাইরাস বহন করে? নিজেই জবাব দিয়ে বলেন, অন্যদের মতো শিশুরাও সর্দি-কাশির ভাইরাস বহন করে।

হাসেলটিন আরো বলেন, শ্বাসতন্ত্রজনিত সব ধরনের রোগের সংক্রমণের ক্ষেত্রে এটিই সত্য, সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই, করোনাভাইরাসও একইভাবে সংক্রমণ ঘটায়। ঠান্ডা-সর্দির মতো নাসারন্ধ্রের মাধ্যমে ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। আর করোনাভাইরাস শরীরে ঢুকে মানুষের মৃত্যুও ঘটাতে পারে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, শিশুরা অন্য কারও কাছ থেকে এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে অন্যদের সংক্রমিত করতে পারে। তাই শিশুদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।

উইলিয়াম হাসেলটিন আরো বলেন, শুধু তাই নয়, পাঁচ বছরের বেশি বয়সী শিশু অন্য মানুষকে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত করতে পারে। কাউকে সংক্রমিত করতে পারে, এমন মাত্রার চেয়ে একটি শিশুর নাকে হাজারগুণ বেশি ভাইরাসও থাকতে পারে। আর তা হবে অনেক অনেক বেশি সংক্রামক।

তবে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ১৮ বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে কোভিড-১৯-এর প্রকোপ কম। আর হয়তো এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, শিশুরা করোনা আক্রান্ত হয় না। তবে তার ওই দাবি নাকচ করে গবেষকরা বলেন, শিশুদের মধ্যে মারাত্মক উপসর্গগুলো না থাকলেও শিশুরা করোনামুক্ত নয়।

আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড চিলড্রেন হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশন এক প্রতিবেদনে জানায়, আগের চার সপ্তাহে শিশুদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ৯০ শতাংশ বেড়েছে। ৯ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৯৯০ শিশু করোনা আক্রান্ত হয়েছে। স্কুল খুলে দেওয়ার কারণেই এই সংক্রমণ বেড়েছে।

আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকসের ভাইস চেয়ারম্যান সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ড. শিন ও’ল্যারি বলেন, শিশুদের দেহ একেবারেই করোনাপ্রতিরোধী তা বলা ঠিক নয়। যদিও তাদের মধ্যে প্রাণঘাতী উপসর্গ দেখা যায় খুব কম।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *