শিবলী সরকার (নবু), রাজশাহী প্রতিনিধি :
রাজশাহীর মেট্রোপলিটন (আরএমপি'র) পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বক্তব্যে বলেন রাজশাহী শিক্ষা নগরীকে নিরাপত্তার শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য সহোযোগিতা দরকার রাজশাহীর জনপ্রতিনিধিদের। তাহলে হয়তো আগামী ২৬ মার্চ মহান বিজয় জাতীয় দিবস উপলক্ষে নিরাপত্তার রাজশাহী শহর হিসেবে ঘোষণা দিতে চান। আরএমপির পুলিশ কমিশনার মহোদয় আবু কালাম সিদ্দিক। এ জন্য যা করা দারকার তাই করা হচ্ছে।
রোববার বিকালে রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালী অঞ্চলের শীতবস্ত্র মানুষদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে, প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আরএমপি পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের সহযোগিতায় কাটাখালি পৌরসভার এলাকার মাসকাটাদীঘি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুশৃঙ্খলভাবে এক হাজার নারী ও পুরুষের মাঝে উন্নত মানের শীতবস্ত্র-কম্বল বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার মহোদয় বলেন, ইতোমধ্যে রাজশাহী মহানগরী থেকে কিশোর গ্যাং মুক্ত করেছি। কিশোর গ্যাং সদস্যদের ডাটাবেজও তৈরি করা হয়েছে। এখন আরএমপি পুলিশের একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজশাহী থেকে মাদকমুক্ত করা। এ কারণে প্রতিটি জায়গায় মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই ও পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান অবহ্নত রয়েছে এবং সেই সাথে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, চুরি, ছিনতাইকারী, মাদক সিন্ডিকেট সকল সদস্যদের অপরাধীদের শনাক্ত করার লক্ষ্যে রাজশাহীর শহরজুড়ে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে।
আরএমপি পুলিশের কমিশনার মহোদয় আবু কালাম সিদ্দিক। তিনি আশাবাদী পুরো রাজশাহীকে নিরাপত্তার চাদরে, গড়ে তোলা হবে।সেটা পুলিশের চলমান কার্যক্রমে আগামী ২৬ মার্চ মহান বিজয় স্বাধীনতার দিবসেই সেটা ঘোষণা দিতে চাই। এই শিক্ষা নগরীতে কোনপ্রকার মাদক ব্যবসায়ী, মাদকাসক্ত, মাদকবাহী, সন্ত্রাসীবাদ ও জঙ্গিবাদ থাকবে না। রাজশাহীর প্রতিটি পরিবারের মানুষ তাঁর সুফল পাবে।
রাজশাহী শিক্ষা নগরীর হিসেবে তরুণ প্রজন্মের যুবসমাজকে মাদক থেকে দূরে থাকার জন্য যা দরকার (আরএমপি) পুলিশের হাতে সবধরনের ব্যবস্থা রয়েছে এবং মাদক থেকে থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। আরও বলেন, কেউ মাদকের সঙ্গে জড়াবেন না। প্রয়োজনে আমরা আপনাদের সাধ্যমতো পুনর্বাসন করবো। কিন্তু এরপরেও যদি কেউ মাদকে সম্পৃক্ত থাকে। তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তখন বাকি জীবনটা জেলখানায় কাটাতে হবে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, আমাদের পুলিশি বাহিনীরা আপনাদের সেবায় জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। এ কারণে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজির আহমেদ স্যারের নির্দেশনায় দেশের প্রতিটি জেলায় বিট-পুলিশিং সেবা চালু করা হয়েছে। এদিকে রাজশাহী অঞ্চলেও বিট পুলিশিং সেবা চালু রয়েছে। ফলে জনগণ খুব সহজেই পুলিশের সেবা পাচ্ছেন। রাজশাহীকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখার পরেই ঘোষণা দেয়া হবে। এরপরে রাজশাহীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি করা হবে। বর্তমান উন্নয়নের দেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমাদের পুলিশ বাহিনী জনগণের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। অপরাধ করে কেউ পালিয়েও থাকতে পারবে না। রাজশাহীর সকল অপরাধীকে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে শনাক্ত করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী। তিনি বলেন, পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের সহোযোগিতায় আমরা রাজশাহীর অসহায় দরিদ্র গরীব দুঃখী নারী ও পুরুষদের সর্বোচ্চ উন্নত ভাল মানের কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। কাটাখালি পৌরসভার সাবেক মেয়র মহোদয় আব্বাস আলী। তিনি কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে বলেন আমরা লোক দেখানো রাজনীতি করি না। আমরা জাতির জনক স্বাধীনতার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শগত বুকে নিয়ে সৈনিক হিসেবে। আজও রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাসিনার নির্দেশনা রাজনীতি করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে মেয়র আব্বাস আলী বলেন, আমার কাটাখালি পৌরসভা অঞ্চলকে একেবারে মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে চাই। কাটাখালি এলাকায় কেউ ভুল করেও মাদক সেবন করতে আসবেন এটা, হতে দেয়া যাবে না। আমি এবার কাটাখালি পৌরসভাকে মাদকমুক্ত করতে পুলিশকে সহায়তা করবো
এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আরএমপির মতিহার জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার বিভূতি ভূষণ বানার্জী, শাহমখদুম জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মতিহার জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার একরামুল হক, পুলিশ কমিশনারের স্টাফ অফিসার সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসান, কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান প্রমুখ।