রাজশাহীতে নিজ সম্পত্তি উদ্ধারে ভুক্তভোগি পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

সারাদেশ

শিবলী সরকার, রাজশাহী ব্যুরোঃ মহানগর আরএমপি পুলিশের বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশের অসহযোগিতায় অসহায় পরিবারের উপর নির্যাতন বন্ধকরণে রাজশাহীতে এক ভু্ক্তভোগি পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। আজ মঙ্গলবার দুপুরের সিরোইল এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগি পরিবারের শিরিন সুলতানা নামে এক মেয়ে লিখিত বক্তব্যে বলেন, রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া খানার আওতাধীন ষ্টেশন রোড নিউ মার্কেট সংলগ্ন স্থায়ী বাসিন্দা। তাদের মৌজা বোয়ালিয়া, জেএল নং- ৯, আর এস দাগ নং-৪৩৮৬, আর এস খতিয়ান নং-১৭০৬, রকম বাড়ি ও দোকান রয়েছে।

বসতবাড়ির এই জায়গার মূল মালিকানায় ৪ ভাগে বিভক্ত। তাদের জায়গার ওপরে পুরাতন দোকানপাট ও বসতবাড়িসহ বেশ কিছু স্থাপনা রয়েছে। এই জায়গার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে তারা বিভিন্নভাবে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আর এই সমস্যা নিয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানায় সহযোগিতা চাইলে দায়িত্বরত পুলিশ সবসময় একটি পক্ষের হয়ে পক্ষপাতিত্ব করে আসছেন। এতে তাদের পরিবারের সবাই একাধিকবার হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন । তাদের বৈধ জায়গা এক ডেভলপার কোম্পানিকে দিতে গিয়েও হয়রানির স্বীকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।

এ নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে । তারপরেও সেই মিমাংশা অজ্ঞাত কারণ দেখিয়ে এবং বিভিন্নভাবে প্রভাব দেখানো সহ নানান দুর্ঘটনার সম্মুক্ষীন করা হচ্ছে । উল্লেক্ষিত জায়গার অংশীদারগণ অবশেষে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মন , ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিনসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সালিশি বৈঠকে বসে সেই জায়গার ৪ পক্ষের সিন্ধান্ত সহ সকল প্রকার শর্ত সমূহ মেনে আইনত কার্যক্রম সম্পূর্ণ করবে মর্মে স্বাক্ষর করেন । কিন্তু পরবর্তীতে সেই জায়গার অংশীদারদের মধ্যে ১ টি পক্ষ মমতাজ নাহার, শাজাহান, রেজাউল করিম জুয়েল , শামীমা সুলতানা শিউলি , দিলারা খাতুন , এজাজুল করিম রাসেল , জিয়াউর করিম সোহেলসহ সেই পক্ষের হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ বিষয়ে থানার ওসি জানেন।

তারা আরো উল্লেখ করেন বিবাদী পক্ষ তাদের জায়গার উপর নিয়ম বহির্ভূতভাবে যখনই কাজ করতে যান তখনই থানানর সহযোগিতা চাইলে। বোয়ালি থানার (ওসি) তাদের কোর্ট থেকে আদেশ নিয়ে আশার কথা বলেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হতে ১৪৫ ধারার ১ টি আদেশ নিয়ে যাই তবুও বোয়ালিায় থানা কোন প্রকার পদক্ষেপ নিচ্ছেনা । ওসির নিকট ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করলে তিনি বলেন নিষেধ করেছেন। তার কথা না শুনলে কিছু করার নাই। ওসিকে বার বার অনুরোধ করলে (ওসি) তাদের হুমকী দেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উলো্লখ করেন। এরপর তাদের একজন ভাড়াটিয়ার উপর গোদাগাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের লোকজন হামলা চালান এবং কাজ চালিয়ে যেতে বলেন।

উপায় না দেখে এবং থানা থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে অবশেষে তারা আরএমপি কমিশনারের শরণাপন্ন হন এবং সমস্ত ঘটনা লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে জানান । তিনি তাদের সামনেই সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেন উপযুক্ত ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য। কিন্ত্র থানা কর্তৃপক্ষ তাদের কোন প্রকার্ সহযোগিতা করছেনা বলে জানান সংবাদ সম্মেলনে। তাদের এই পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষায় সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ ও আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ করেন।

এবিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি শো-রুম করার জন্য ৩৫ লক্ষ টাকা দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য লিজ নিয়েছেন। এর বিপরিতে স্ট্যাম্পে লিখিত করা হয়েছে। এই নিয়ে কারো সাথে কোন প্রকার তার বিবাদ নাই। তাদের শরীকের মধ্যে সমস্যা রয়েছে। তার লিজকৃত সম্পত্তির মালিক যেই হন, তাকেই তিনি ভাড়া দেবেন। আর তারা যদি শো-রুম করতে না দেন তাহলে টাকা ফেরত দিলে তিনি চলে আসবেন। এ নিয়ে কারো সাথে তার কোন প্রকার বিবাদ নাই। আর তিনি কারো সম্পত্তি দখল বা কাউকে মারপিট করতে জাননি বলে জানান চেয়ারম্যান। তার আনিত অভিযোগ মনগড়া ও ভিত্তিহীন।

এদিকে অভিযোগ সম্পর্কে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। তিনি কারো পক্ষ নিয়ে কাজ করছেন না। এটা অভিযোগকারীদের পারিবারিক বিষয়। এ নিয়ে পূর্বে স্থানীয় কাউন্সিলর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে মিমাংশা করে দিয়েছিলেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *